গণহত্যার হাতে নিয়াজি যখন আত্মসমর্পণ লিখছে
তখন অনুভব করা যাচ্ছিল তার কম্পন
নিয়াজি তখন নিঃসঙ্গ ও বিধ্বস্ত
না কলম, না আগ্নেয়াস্ত্র, না মাতাল ইয়াহিয়া, না ভুট্টো
কেউ তার সঙ্গী নয়
অদূরে দাঁড়ানো হানাদার পাকিস্তানি সেনারা স্তব্ধবাক
তাদের চোখ নতমূখী, তাদের হন্তারক আঙুলও অসাড়
চতুর্দিকে টানটান উত্তেজনা
ঐতিহাসিক মুহূর্তের অপেক্ষায় মুক্তিকামী জনতা
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যৌথ কমান্ডের সৈনিকেরা
শেষ দৃশ্যে নিয়াজি কলম তুলে নিল
কাঁপা হাতে লিখল চূড়ান্ত পরাজয় ।
এই দৃশ্যে রেসকোর্স মাঠে বদলে গেল বাংলার আকাশের রঙ
আমরা ফিরে আসলাম মৃতদের দেশ থেকে
দীর্ঘ পরবাস, রাতজাগা নির্বাসন শেষে,
কাঁধে সহযোদ্ধার লাশ, হাতে রাইফেল
মৃত্যুঞ্জয়ী উল্লাসে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বাংলা’ বলে
আমরা ফিরে আসলাম-
তখন রেসকোর্স মানে স্বাধীনতা
তখন রেসকোর্স মানে সার্বভৌম জাতির পতাকা
তখন রেসকোর্স মানে বিজয় উৎসব।
এই দৃশ্য আজ নদীস্রোতে, বহমান জলে লেখা
এই দৃশ্য লেখা আছে বর্ণমালার রঙে, লাল ফুলে
এই দৃশ্য শহীদ মিনার, এই দৃশ্য স্মৃতিসৌধ
এই দৃশ্য বধ্যভূমিতে স্বজনের স্মৃতিমুখ
এই দৃশ্য আমার সোনার বাংলা
এই দৃশ্য বজ্রকণ্ঠ, মুজিবের সাহসী তর্জনী
এই দৃশ্য চির উন্নত মম শির-
আমরা হারিনি। এই দৃশ্য বিজয়ী জাতির।