Poem

বয়োধর্ম অনুসারে ইচ্ছার সি-গাল ভাসা ভাসা
ওড়ে বহু ক্রোশ।
মধ্যবয়সের ভেলা লগি ঠেলে ঠেলে
চমৎকার শান্ত তীরে নিয়ত ভেড়াতে চাই, ছাড়ি আইমুশা,
আর ভাবি যদি এই জীবনের প্রুফ দেখা যেতো, তবে
কয়েক গ্যালির
কিছু দাঁড়ি কমা উল্টে পাল্টে নিলে আক্‌শি বাক্‌শি
নিরুপম সংশোধিত হতো।

জীবনের যে-ভাগ মেঘলা তার চারপাশে সযত্নে দিতাম
বুনে বোদ্দুরের পাড় স্রেফ
কম্পিউটারের দক্ষতায়, ডোবার কচুরিপানা
আহ্লাদে আটখানা হতো নীলপদ্ম। রঙ-ফাউন্ডের
গভীর সঙ্কেতে ক্ষুদ্র চাপাতো শরীরে বৃহতের জামেয়ার।
নির্ঘাৎ ডিলিটি করে অপ্রেমের ‘অ’টা
ভাসতাম চোখ বুজে আ’মরি প্রেমের সরোবরে।

কিছু শব্দ কেটে ছেঁটে ভিন্নতর, শব্দাবলি বসালেই, দ্যাখো,
গলির বসতবাটি বাংলো প্যাটার্নের বাড়ি হবে,-
সামনে বাগান, গাড়ি বারান্দায় সর্বদা নিদেনপক্ষে, টয়োটা প্রস্তুত।
অধিকন্তু বেবাক খবর নেবো জাহাজের, অথচ আদার
ব্যাপারির অপবাদ থাকবে না কোনো।

আরো কিছু হেরফের করা যায়, যতটুকু চাই,
‘সি কপি’র মহিমায়; প্রতিভার হর্স পাওয়ারটা
দিব্যি উস্‌কে দেয়া যায় অন্তত সহস্রগুণ আর
পয়মন্ত ব্যবসায় ঘন ঘন দাঁও মারলেই সর্বক্ষণ

লুটোবে পায়ের কাছে প্রভুভক্ত কুকুরের মতো
নানান পদবী। তৎক্ষণাৎ ঊনপঞ্চাশ ফর্মার
জীবন চরিতে জানি জন্মাবে আমার অধিকার।
কালের সজাগ চৌকিদার
হেঁকে যাক প্রাণপণে, তুলো গুঁজে কানের বিবরে
খানিক স্পেসিং করে নিয়ে
গৃহিণীর মেদ আর বয়স কমিয়ে একালে আমিও হবো
প্রেমার্ত প্রোজ্জ্বল ক্যাসানোভা।
বস্তুত ড্যাশের পুল পেরুলেই সপ্তম স্বর্গের
সিঁড়ি আলোজ্বলা, স্বপ্ন-ধলা।

আপাতত মধ্যবয়সের তোবড়ানো, রস ফতুর এক
ভেলায় চেঁচাই তারস্বরে, মুহুর্মুহু “ওগো প্রভু, দয়াময়
তাড়াতাড়ি অধমের জীবনের এক তাড়া প্রুফ পাঠাবেন?”

Author Bio

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে মর্যাদালাভ করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ, তথা

More

This post views is 103

Post Topics

Total Posts

2547 Published Posts