Poem

সবিতা, মানুষজন্ম আমরা পেয়েছি
মনে হয় কোনো এক বসন্তের রাতে
ভূমধ্যসাগর ঘিরে যেই সব জাতি,
তাহাদের সাথে
সিন্ধুর আঁধার পথে করেছি গুঞ্জন;
মনে পড়ে নিবিড় মেরুন আলো, মুক্তার শিকারী
রেশম, মদের সার্থবাহ,
দুধের মতন শাদা নারী।

অনন্ত রৌদের থেকে তারা
শাশ্বত রাত্রির দিকে তবে
সহসা বিকেলবেলা শেষ হ’য়ে গেলে
চ’লে যেত কেমন নীরবে।
চারিদিকে ছায়া ঘুম সপ্তর্ষি নক্ষত্র;
মধ্যযুগের অবসান
স্থির ক’রে দিতে গিয়ে ইওরোপ গ্রীস
হতেছে উজ্জ্বল খ্রীষ্টান।

তবুও অতীত থেকে উঠে এসে তুমি আমি ওরা—
সিন্ধুর রাত্রির জল জানে—
আধেক যেতাম নব পৃথিবীর দিকে;
কেমন অনন্যোপায় হাওয়ার আহ্বানে
আমরা আকুল হ’য়ে উঠে
মানুষকে মানুষের প্রয়াসকে শ্রদ্ধ করা হবে
জেনে তবু পৃথিবীর মৃত সভ্যতায়
যেতাম তো সাগরের স্নিগ্ধ কলরবে।


এখন অপর আলো পৃথিবীতে জ্বলে;
কি এক অপব্যয়ী অক্লান্ত আগুন!
তোমার নিবিড় কালো চুলের ভিতরে
কবেকার সমুদ্রের নুন;
তোমার মুখের রেখা আজো
মৃত কতো পৌত্তলিক খ্রীষ্টান সিন্ধুর
অন্ধকার থেকে এসে নব সূর্যে জাগার মতন;
কতো কাছে— তবু কতো দূর।

Author Bio

জীবনানন্দ দাশ, ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, লেখক ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অন্যতম। তার কবিতায় পরাবাস্তবের দেখা মিলে। জীবনানন্দের প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের

More

This post views is 232

Post Topics

Total Posts

151 Published Posts