তুমি তো কিছুই নিলে না, অক্ষত যৌবন, প্রেম, দ্বিধাগ্রস্ত
আমার পৃথিবী; সুজলা-সুফলা বাংলা, প্রিয় জন্মভূমি;
শ্যামরক্তে পোষা নীলপাখি, তুমি তো কিছুই নিলে না।
শেষ রাত্রির ট্রেন ফেল করা করুণ যাত্রীর মতো আমি
জলের সৌরভ নিয়ে ফিরেছি একাকী।
বিবাহবাসর থেকে বর তার যাত্রীসহ উঠে গেলে
অপূর্ণ বধূর মতো মেখেছি সমস্ত দেহে
চন্দনের পবিত্র অপমান। তুমি তবু কিছুই নিলে না,
অক্ষয় যৌবন, প্রেম, বসন্তের শ্ৰীমন্ত শয়ান।
বুঝি তুমি প্রেম নও, নও প্রেমিকাও, তবু এক প্রেমিকার
মতন বিশ্বাস আমাকে দিয়েছে যে সে আমার প্রেমের গৌরব,
ভালোবাসা, আমরণ রক্তলগ্ন সাপ।
তাকে, তার পাদপদ্মে সমর্পিত আমার সমস্ত সৈন্য,
তীরন্দাজ, কবিতা-কাঞ্চন, তুমি তবু কিছুই নিলে না;
নগর বিধ্বস্ত করে ফিরে গেলে ভূমিকম্প, টর্নেডোর হাওয়া।
আমন ধানের মতো জল ভেঙে মাথা তুলে দাঁড়ালে বিষাদ
আজন্ম অন্ধের মতো তোমার আশ্রয় চাই, প্রিয়তমা।
বিষাদে বিষাক্ত দেহ তুলে নেবে তুমি, জেলেরা যেমন করে
ত্রস্ত হাতে জাল থেকে মৎস্য তুলে নেয়– অথবা,
বেদেনী যেমন সব খেলা শেষ হলে বাক্সে ভরে
দন্তহীন ক্রীড়াক্লান্ত বিষাক্ত গোক্ষুর।