তোমার আমার মাঝে যে দূরত্ব,
দূরত্বের যে শুন্যতা
তা প্রাণ পেয়ে গেছে;
আমরা নিষ্প্রাণ বলে আমাদের প্রাণ কেড়ে নিয়ে
নধর হিংস্র প্রাণী হয়ে উঠেছে।
সবুজ ঘাস বা সুস্বাদু পানিতে তার বিতৃষ্ণা
তার প্রিয় রক্ত – আমাদের দেহে ছটফট করা রক্ত।
নীরবতা হলো পশুর সবচেয়ে হিংস্র আচরণ,
এমনকি তোমার
করুণ চোখের দিকে নীরব তাকানো
সে-ও তো হিংস্রতার চুড়ান্ত প্রকাশ,
সেই সুযোগে আমাদের দূরত্বজাত পশু
ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাদের কাঁধে;
কিছু বুঝে ওঠার আগেই
আমি তোমার হাতে পশুর লাশ হয়ে যাই।
শয়তানদের নির্বাচন শেষ হয়েছে
তারা একে একে হেঁটে চলেছে পার্লামেন্টের দিকে
তাদের চামড়ার নিচে
বিষাক্ত নুনের মতো জ্বলছে পশু;
তাদের চোখের নিচে ঘুমিয়ে আছে মৃতুদূত
আমাদের দূরত্বজাত পশু
সেই শয়তানদের পথপ্রদর্শক।
একজন মানুষের হাত থেকে
আরেকজনের হাত কতদূর এখন?
মানুষের হৃদয় থেকে কতদূর অন্য মানুষের হৃদয়?
মানুষের কাঁধ থেকে অন্য কাঁধের দূরত্ব কতটুকু?
যে কাঁধের উপর তোমার হাত থাকার কথা ছিলো
সেখানে জ্বলছে আগুনের মাফলার
আমাদের দূরত্বের ফাঁকা শূন্যতার বাতাসে
সে আগুন জ্বলছে দিগুণ!
আমাদের দূরত্বে নদী হয়ে গেছে
পৃথিবীর শরীরে শ্বাষরুদ্ধকর শেকল;
আমাদের মাঝের শূন্যতা
হয়ে গেছে আগামীর চোরাবালি,
আমাদের হারানো প্রেমে
সবুজ তৃণভূমি হয়েছে মরুভূমি,
যে হরিণ শাবকের চোখ থেকে
আবিষ্কার করেছিলাম প্রেম
আমাদের দূজনার মাঝের দূরত্ব
সেই হরিণের লাশ হয়ে গেছে;
যে বাঁধনে চিনেছিলাম পরস্পরকে
সেই গ্লেসিয়ার গলে
দেখো সমুদ্র এখন রক্তের মহাপ্লাবন।
এসো তোমার নখরে দূরত্বের প্রাণীকে হত্যা করে
এসো আমার নিঃশ্বাসের একেবারে কাছাকাছি,
মানুষ বা মানুষের সমাজ নয় পৃথিবীকে শোনো।
ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলা
পশুর মতো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে
মুকুট দলে পায়ের তলে স্বশাসিত রাষ্ট্র হয়ে ওঠো,
আবার হয়ে ওঠো পৃথিবী – মহাজগতের পাতক;
যেখানে ঘাষের উপর শরীরের শরীর ঘেষে
খেলা করছে স্বর্গীয় পশু;
আমাদের না-বৃদ্ধা সময়ের গর্ভ থেকে
তারা বের হওয়া নরকমুক্ত সব পবিত্রশিশু
জানোয়ার শাবকের মতো
যাদের চোখে জ্বলে আছে প্রেমের মহানক্ষত্র।