Poem

কষ্টের জীবন (মানুষ কাঁদিয়া হাসে)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মানুষ কাঁদিয়া হাসে,
পুনরায় কাঁদে গো হাসিয়া।
পাদপ শুকায়ে গেলে,
তবুও সে না হয় পতিত,
তরণী ভাঙিয়া গেলে
তবু ধীরে যায় সে ভাসিয়া,
ছাদ যদি পড়ে যায়,
দাঁড়াইয়া রহে তবু ভিত।
বন্দী চলে যায় বটে,
তবুও তো রহে কারাগার,
মেঘে ঢাকিলেও সূর্য
কোনোমতে দিন অস্ত হয়,
তেমনি হৃদয় যদি
ভেঙেচুরে হয় চুরমার,
কোনোক্রমে বেঁচে থাকে
তবুও সে ভগন হৃদয়।
ভগন দর্পণ যথা,
ক্রমশ যতই ভগ্ন হয়,
ততই সে শত শত,
প্রতিবিম্ব করয়ে ধারণ,
তেমনি হৃদয় হতে,
কিছুই গো যাইবার নয়।
হোক না শীতল স্তব্ধ,
শত খন্ডে ভগ্ন চূর্ণ মন,
হউক-না রক্তহীন,
হীনতেজ তবুও তাহারে,
বিনিদ্র জ্বলন্ত জ্বালা,
ক্রমাগত করিবে দাহন,
শুকায়ে শুকায়ে যাবে,
অন্তর বিষম শোকভারে,
অথচ বাহিরে তার,
চিহ্নমাত্র না পাবে দর্শন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Author Bio

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায়

More

This post views is 742

Post Topics

Total Posts

469 Published Posts