Poem

পাঁঠা সংকীর্তন

শামসুর রাহমান

সেদিন হঠাৎ তাকে দেখে, সত্যি বলতে কী, গাটা
গুলিয়ে উঠল খুব, এমন প্রচণ্ড বিবমিষা
কখনো হয়নি আগে। অতি মনোহর রাম পাঁঠা
তাকে বলা যায় সহজেই। পালাতে চাইলে দিশা
মেলা ভার, বেড়ে কান্তিমান শিঙ দুটো নেড়ে নেড়ে,
ঘাড় থেকে ঝুলে-পড়া সোনালি আঁশের মতো লোম
প্রদর্শন করে সকলের নেক দৃষ্টি নেয় কেড়ে
অচিরাৎ, ক্রমশ ছাগল হয়ে ওঠা কিছু ডোম
তার নিত্য সহচর। প্রকৃত প্রস্তাবে বড় খাসা
এই জীব, বলে লোকে। পাঁচ ফুট সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি
উঁচু এই রাম পাঁঠাটার থমথমে মাথা ঠাসা
লোকগাথা আর শত কল্প-কাহিনীতে। যে-বিরিঞ্চি
বাবা ওকে দীক্ষা দিয়ে ভবনদী দিয়েছেন পাড়ি,
অনুমান করে অনেকেই, ওরই থুথু ছিটানোর
ভঙ্গিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিশ্ব ছেড়ে সাততাড়াতাড়ি
আছেন পরম সুখে স্বর্গলোকে বন্ধ করে দোর,
পাছে সেই ঢুঁ মেরে বেড়ানো এঁড়ে জীব দেয় হানা
সেখানেও। বংশ গৌরবের ঘোরে খুর-অলা পাটা
পায়শই ঠোকে ঘাসে এবং মাটিতে একটানা
পঁচিশ মিনিট মুগ্ধাবেশে সেয়ানা সে রামপাঁঠা।

Author Bio

শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে মর্যাদালাভ করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ, তথা

More

This post views is 109

Post Topics

Total Posts

2547 Published Posts